এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

পুস্তকাকারে অপ্রকাশিত রচনা  :  জাগরণ         
পরিচ্ছেদ: / 9
পৃষ্ঠা: / 64
বৃদ্ধ এ প্রশ্নেরও কোন জবাব দিলেন না, তেমনি মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিলেন।

ইন্দু কহিল—আপনি একটা কথারও আমার জবাব দিলেন না, মনে মনে বোধ হয় বিরক্ত হয়েছেন।

এবার বৃদ্ধ কথা কহিলেন; বলিলেন—এটি কিন্তু তোমার আসল কথা নয়, মা। তুমি ঠিক জানো, তোমার বুড়ো কাকাবাবু মনে মনে তোমাকে আশীর্বাদ করছেন বলেই কথা কবার তাঁর ফুরসত হচ্ছে না। আচ্ছা, তোমার দাদা কি বলেন, ইন্দু?—এই বলিয়া তিনি উৎসুকনেত্রে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন। এই ঔৎসুক্যের হেতু বুঝিতে ইন্দুর বিলম্ব হইল না, কিন্তু ইহার ঠিক কি উত্তর যে সে দিবে, তাহাও ভাবিয়া পাইল না।

কোন-কিছুর জন্যই নিরতিশয় আগ্রহ প্রকাশ করা বৃদ্ধের স্বভাব নয়, ইন্দুর এই অবস্থা-সঙ্কট অনুভব করিয়া তিনি অন্য প্রসঙ্গ উত্থাপন করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন—তোমাদের কবে যাবার দিন স্থির হল মা?

কোথায় কাকাবাবু?

জমিদারি দেখতে।

ইন্দু কহিল—আমাকে তাঁরা এখনও জানান নি। কিন্তু যদি সম্ভব হয়, সে-ক'টা দিন আমি আপনাদের কাছে থাকতে পারলেই ঢের বেশী খুশী হব, কাকাবাবু।

বৃদ্ধ কহিলেন—মা, এই আমার বন্ধুর বাড়ি। এস, ভেতরে চল।

ইন্দু ইতস্ততঃ করিয়া কহিল—ঐ ত সুমুখে খোলা মাঠ দেখা যাচ্ছে, কাকাবাবু, আমি কেন আধঘণ্টা বেড়িয়ে আসি না? আমার সঙ্গে ত এদের কোনরূপ পরিচয় নেই।

বৃদ্ধ কহিলেন—ইন্দু, এ আমাদের পাড়াগাঁ, এখানে পরিচয়ের অভাবে কারও ঘরে যাওয়ায় বাধে না। কিন্তু তোমাকে আমি জোর করতেও চাইনে।—একটু হাসিয়া বলিলেন, তবে রোগীর ঘরের চেয়ে খোলা মাঠ যে ভাল, এ আমি অস্বীকার করিনে। যাও, শুধু এইটুকু দেখো, যেন পথ হারিয়ো না।—এই বলিয়া তিনি ইন্দু অগ্রসর হইতেই কহিলেন, আর এই মাঠের পরেই বরাট গ্রাম। যদি খানিকটা এগোতে পারো, সুমুখেই অমরনাথের টোল দেখতে পাবে। যদি দেখা হয়েই যায় ত বলো, কাল যেন সে আমার সঙ্গে একবার দেখা করে। এই বলিয়া তিনি সদরের দ্বার ঠেলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিলেন।