এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

অজ্ঞাত রচনা  :  ভালমন্দ         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 5
মেয়ে বাপের হাতে একটু চাপ দিয়ে বললে, বাবা, চলো না যাই। সন্ধ্যে হয়ে যাবে।
অবিনাশ পা বাড়াতেই আলোকলতা আঁচলে চোখ মুছে ধরা-গলায় বললেন, আর একটু দাঁড়াও। তোমার এ কি ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা? এর নড়চড় কি নেই?
অবিনাশ ঘাড় নেড়ে বললেন, না। সে হবার জো নেই।
দেখো, আমি তোমার স্ত্রী, তোমার সুখ-দুঃখের ভাগী—
অবিনাশ বাধা দিলেন, বললেন, তা যদি সত্যি হয় ত আমার সুখের ভাগ এতদিন পেয়েছ, এবার আমার দুঃখের ভাগ নাও।
আলোক বললেন, রাজি আছি কিন্তু সমস্ত মান-ইজ্জত বজায় রেখে এতগুলো টাকায় চলে না, এই সামান্য ক’টা পেনশনের টাকায় চালাবো কি করে?
অবিনাশ বললেন, মান-ইজ্জত বলতে যদি বড়মানুষি বুঝে থাকো ত চলবে না আমি স্বীকার করি। নইলে সঞ্জীববাবুরও চলে।
কিন্তু তোমার মেয়ে? উনিশ-কুড়ি বছরের হলো, তার বিয়ে দেবে কি করে?
মেয়ের সমস্যার সমাধান করতে শাশ্বতী বললে, মা, আমার বিয়ের জন্যে তুমি ভেবো না। যদি নিতান্তই ভাবতে চাও ত বরঞ্চ ভেবো সঞ্জীববাবু কি করে তাঁর দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
উত্তর শুনে মায়ের আর একবার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটলো। সজল চক্ষু দৃপ্ত হলো, ধরা-গলা মুহূর্তে তীক্ষ্ণ হয়ে কণ্ঠস্বর গেল উচুঁ পর্দায় চড়ে। বললেন, শাশ্বতী, পোড়ারমুখী, আমার সুমুখ থেকে এখনো তুই দূর হয়ে গেলি নে কেন? যা যা বলছি।
যাচ্চি মা। চলো না বাবা।
পাশের ঘরে হিমাংশু কবিতা রচনায় রত ছিল। আই. এ. পরীক্ষার তৃতীয় উদ্যমের এখনো কিঞ্চিৎ বিলম্ব আছে। তার কবিতা ‘বাতায়ন’ পত্রিকায় ছাপা হয়, আর কোন কাগজওয়ালা নেয় না। ‘বাতায়ন’-সম্পাদক উৎসাহ দিয়ে চিঠি লেখেন, “হিমাংশুবাবু, আপনার কবিতাটি চমৎকার হয়েছে। আগামীবারে আর একটা পাঠাবেন—একটু ছোট করে। এবং ঐ সঙ্গে শাশ্বতী দেবীর একটি রচনা অতি অবশ্য পাঠাবেন। “ জানিনে, ‘বাতায়ন’-সম্পাদক সত্যি বলেন, না ঠাট্টা করেন। কিংবা তাঁর আর কোন উদ্দেশ্য আছে। শাশ্বতী দেখে হাসে—বলে, দাদা, এ চিঠি বন্ধু-মহলে আর দেখিয়ে বেড়িও না।