এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

প্রবন্ধ  :  নারীর মূল্য         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 47
এ কথা সত্য হইলেও, এ কথাটাও বুঝিয়া দেখিবার বিষয়, বাস্তবিক নারীর অনুপাত তাহাতে বৃদ্ধি হয় কি না। কারণ, এই কথাটা অনেকেই গণনার মধ্যে আনেন না যে, প্রায় সমস্ত যুদ্ধপ্রিয় জাতিই নিজেদের নারীর অনুপাত বৃদ্ধি না পাইবার দিকে প্রখর দৃষ্টি রাখিয়া থাকে। প্রধান উপায় নিজেদের শিশু-কন্যা হত্যা করিয়া। প্রায় সমস্ত আদিম অসভ্য জাতিরা শিশু-কন্যা বধ করিয়া ফেলিত। রাজপুতেরা করিত, আরব শেখেরা কন্যা জন্মিবামাত্রই গর্ত কাটিয়া পুঁতিয়া ফেলিত, কেঁধাপ্রদেশের আরবেরা শিশু-কন্যার পাঁচ বৎসর বয়সে তাহাকে হত্যা করিবার পূর্বে কন্যার জননীকে সম্বোধন করিয়া বলিত, “এইবার মেয়েকে গন্ধ মাখাইয়া দাও, সাজাইয়া দাও, আজ সে তার মায়ের ঘরে যাইবে!” অর্থাৎ, কূপের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হইবে। কোরিশের লোকেরা মক্কার নিকটবর্তী আবুদেলামা পাহাড়ে নিজেদের কন্যা বধ করিত। প্রাচীন গ্রীক ঐতিহাসিক স্ট্রাবো বলিয়া গিয়াছেন, “the practice of exposing female infants and putting them to death being so common among the ancients, that is remarked as a thing very extra-ordinary in the Egyptians, that they brought up all their children.” চীনাদের মধ্যে শুনিয়াছি এ প্রথা আজও আছে। গ্রীকদের সম্বন্ধে Posidippus-এর একটা প্রচলিত উক্তি Sale উদ্ধৃত করিয়াছেন, “a man, though too poor, will not expose his son; but if he is rich, will scarce preserve his daughter.”

সুতরাং লড়াই করিয়া নিজেরা মরিলে, বা কন্যা হত্যা করিলে নারীর অনুপাত বাড়ে না, কমেও না, অনুপাতের উপর নারীর সম্মান বা অসম্মান (মূল্য) নির্ভরও করে না। করে পুরুষের এই ধারণার উপর—নারী সম্পত্তি, নারী শুধু ভোগের বস্তু! তাই নিজেদের কন্যা বধ, তাই পরের কন্যা হরণ করিয়া আনিবার প্রথা! নিজেদের কন্যা পরে লইয়া গেলে মহা অপমান, পরের মেয়ে কাড়িয়া আনিতে পারিলে মহা গৌরব! এই জন্যই এক পুরুষের বহু স্ত্রী সম্মান ও বলের চিহ্ন। Burckhardt বলিয়াছেন এই ধারণা ওয়াহাবিদের মধ্যে আজও এত প্রবল যে, তাহারা ইউরোপের এক পুরুষের একটিমাত্র স্ত্রীর কথা শুনিয়া বিস্ময়ে হাঁ করিয়া থাকে। কথাটা সত্য বলিয়া তাহারা মনের মধ্যে বিশ্বাস পর্যন্ত করিতে পারে না।

আর না।