এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

পুস্তকাকারে অপ্রকাশিত রচনা  :  সাহিত্য সম্মিলনের রূপ         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 2
আপনাদের হয়ত মনে হবে কিছু একটা সারালো ও ধারালো লেখা আমার লিখে আনা উচিত ছিল যা ছাপালে হয় সভাপতির অভিভাষণ, কিন্তু তা আমি করি নি। পারিনে বলে নয়, সময় ছিল না বলে নয়, অহেতুক ও অকারণ বলেই লিখিনি। তবে এটা কি? এ শুধু মুখে-মুখে বলার শক্তি নেই বলেই এই সভায় উপস্থিত হবার অনতিকাল পূর্বে দু-ছত্র টুকে এনেছি।

প্রশ্ন উঠতে পারে এ সভার লক্ষ্য কি? উদ্দেশ্য কি? আমার মনে হয় লক্ষ্য শুধু এই কথাটা মনে রাখা এ আমাদের উৎসব, এ আমাদের আনন্দের অনুষ্ঠান। জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসিনি, যুক্তি – তর্কের বুদ্ধি ও পাণ্ডিত্য অবলম্বন করে এখানে এসে আমরা সমবেত হইনি। সাহিত্য-চর্চার ক্ষেত্র আর যেখানেই কেন না হোক এখানে নয়। এই কথাটাই আজ আমার অন্তর বলে। তাই আমি এসেছি উৎসবের মন নিয়ে, আমি এসেছি হৃদয়ের আদান-প্রদানে পরস্পরের সুনিবিড় পরিচয় নিতে। এ উপলক্ষ না ঘটলে হয়ত কোনদিন আমাদের আপনাদের দেশে আসা হত না, আপনাদের সৌজন্য সহৃদয়তা সৌভ্রাত্র ও আতিথ্যের স্বাদ গ্রহণ করা ভাগ্যে জুটতো না। এই আমাদের পরম লাভ, এই আমাদের আজকের সভার সার্থকতা। আরও একটা কথা বড় করে আজ আমার বারংবার মনে হয়। মাতৃভাষার সেবক আমরা,—সাহিত্যের পুণ্য মিলনক্ষেত্র ছাড়া এতগুলি হিন্দু-মুসলমান ভাই-বোনেরা আমরা একাসনে বসে এমনভাবে মিলতে পারতাম আর কোন্‌ সভাতলে?

আর একটা কথা বলার বাকি আছে। সে আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা নিবেদন করা। আমার গভীর আনন্দ ও তৃপ্তির কথা শতমুখে বলা। কিন্তু মুখ আমার একটি, তার সাধ্য সীমাবদ্ধ। এই ক্ষোভের কথাটাও জানিয়ে রেখে আমি বিদায় গ্রহণ করলাম।