এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

উপন্যাস  :  চন্দ্রনাথ         
পরিচ্ছেদ: / 20
পৃষ্ঠা: / 57
লখীয়ার মা নিকটে ছিল, সে দয়ালঠাকুরকে ইশারা করিয়া বাহিরে ডাকিয়া বলিল, ঠাকুর, যাও, তুমি থাকলে সারাদিন ঐ কথাই বলবে।

আর চার-পাঁচ দিন কাটিয়া গেল। অবস্থা নেহাত মন্দ হইয়াছে, শম্ভু মিশির আজকাল রাত্রিদিন থাকে, মাঝে কবিরাজ আসিয়া দেখিয়া যায়। আজ সমস্ত দিন ধরিয়া সংজ্ঞা ছিল না; সন্ধ্যার পর একটু জ্ঞান হইয়াছিল, তাহার পর অর্ধচেতনভাবে পড়িয়া ছিলেন। গভীর রাত্রে কথা কহিলেন, বিশু দাদা, আমার মন্ত্রীটা! এবার দে, নইলে মাত হয়ে যাব! শম্ভু মিশির কাছে আসিয়া বলিল, বাবুজী কি বলচে?

কৈলাসচন্দ্র তাহার পানে একবার চাহিলেন, ব্যস্তভাবে বালিশের তলায় একবার হাত দিলেন, যেন কি একটা হারাইয়া গিয়াছে, প্রয়োজনের সময় হাত বাড়াইয়া পাইতেছেন না। তাহার পর হতাশভাবে পাশ ফিরিয়া মৃদু মৃদু বলিলেন, বিশু, বিশ্বেশ্বর, মন্ত্রীটা একবার দে ভাই, মন্ত্রী হারিইয়ে আর কতক্ষণ খেলি বল্‌?

এ বিশ্বের দাবাখেলায় কৈলাসচন্দ্রের মন্ত্রী হারাইয়া গিয়াছে। বিশ্বপতির নিকট তাহাই যেন কাতরে ভিক্ষা চাহিতেছে। শম্ভু মিশির নিকটে আসিয়া দাঁড়াইল। লখীয়ার মা প্রদীপ মুখের সম্মুখে ধরিয়া দেখিল, বৃদ্ধের চক্ষু কপালে উঠিয়াছে, শুধু ওষ্ঠাধর তখনও যেন কাঁপিয়া কহিতেছে, বিশ্বেশ্বর! মন্ত্রী-হারা হয়ে আর কতক্ষণ খেলা যায়, দে ভাই, দে।

পরদিন দয়ালঠাকুর চন্দ্রনাথকে পত্র লিখিয়া দিলেন যে, গতরাত্রে কৈলাসচন্দ্রের মৃত্যু হইয়াছে।