এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

পুস্তকাকারে অপ্রকাশিত রচনা  :  নারীর লেখা         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 12
জ্যাঠামো অন্তরে অনুভব করা যায়, কিন্তু উইট্‌ কোথায় অশ্লীল হইয়া উঠে, আর্ট কোথায় আতিশয্যে ও ছিবলামিতে রূপান্তরিত হয়, সেটা যে-বয়সে বোঝা যায়, ততটা বয়স এখনও লেখিকার হয় নাই। তবে, আশা করি এ দোষ একদিন শুধরাইবে। কিন্তু, তাঁহার না জানিয়া যা-তা উপমা দিবার স্বপক্ষে সে-রকম কৈফিয়ত কিছু নাই। তাই দৃষ্টান্তের মত দুই-একটা উল্লেখ করিব মাত্র।

একস্থানে বলিতেছেন, “বিজন-পথে চলিতে চলিতে অকস্মাৎ পায়ের নীচে দংশনোদ্যত সর্প দেখিলে পথিক যেমন আড়ষ্ট কাঠ হইয়া দাঁড়ায়, ইত্যাদি।” তাই বটে ! একটা ন্যাকড়া কিংবা দড়ির টুক্‌রা দেখিলে লাফাইয়া কে কার ঘাড়ে পড়িবে ঠিক থাকে না, আড়ষ্ট হইয়াই দাঁড়ায়! তাও আবার যে-সে সর্প নয়—একেবারে দংশনোদ্যত সর্প! ইনি যে লেখেন নাই, রান্নাঘরে হঠাৎ জ্বলন্ত আগুনের টুকরা পায়ের নীচে মাড়াইয়া ধরিয়া রাঁধুনী যেমন অবাক হইয়া হাঁ করিয়া দাঁড়ায়,—ইহাই পরম ভাগ্য!

আর একস্থানে লিখিতেছেন, “দীপ্ত সূর্য্যালোকের উপর মেঘ আসিয়া পড়িলে তাহা যেমন এক-মুহূর্ত্তেই ম্লান হইয়া যায়, শিবানীর মুখ তেমনি মুহূর্ত্তে অন্ধকার হইয়া আসিল। ”এটা অলঙ্কার না উপমা? কিন্তু দীপ্ত সূর্যালোকের উপর মেঘ আসিয়া পড়িলে কি হয়? সাদা দেখায়। কিন্তু লেখিকা ঐ যে ম্লান বলিয়াছেন, কাজেই তাঁহার অন্ধকার মুখের সহিত সূর্যালোক-পতিত মেঘের তুলনা করিবার অধিকার জন্মিয়াছে! এই কি! আর এক জায়গায় গভীর কৃষ্ণবর্ণ মেঘের গায়ে বক প্রভৃতিকে উড়িতে দেখিয়া তাঁহার মনে হইয়াছে যেন 'কৃষ্ণতারকা' উড়িয়া যাইতেছে। কালো মেঘের তলায় বক কি কৃষ্ণতারকার মত দেখায়? তা ছাড়া 'কৃষ্ণতারকা'ই বা কি? রাত্রে আকাশের পানে চাহিয়া কোনদিন ত কালো কুচ্‌কুচে নক্ষত্র চোখে পড়ে না। আর যদি চোখের তারাই হয়, সেও ত সাদা পদার্থের মাঝখানে থাকে। কালো মেঘের সঙ্গে তাহার সাদৃশ্যই বা কোথায়? প্রকৃতি-দেবীর উপর এই রকমের উৎপাত আরও অনেক আছে—সেইগুলি একটুখানি হুঁশ করিয়া করা উচিত ছিল। কেন না, নিজে যাহা জানি না, তাহা না জানানই বুদ্ধির কাজ।

যা হউক, বইখানি, শুনিয়াছি ৫। ৬শ পাতার; আমি মাত্র ২৫। ৩০ খানি পাতা পড়িয়াছি; সুতরাং আশা করিতেছি, যাহা পড়ি নাই তাহার মধ্যে ভাল ভাল জিনিসই রহিয়া গিয়াছে। মেয়েটাও বলিতেছিল, বইখানি জ্ঞানগর্ভ। বেদ, কোরান, বাইবেল, রামায়ণ, মহাভারত, এথিক্স, মেটাফিজিক্স, রামপ্রসাদী, তন্ত্র, মন্ত্র, ঝাড়ফুঁক, মারণ, উচাটন, বশীকরণ—সমস্তই আছে।