এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

পুস্তকাকারে অপ্রকাশিত রচনা  :  সমাজ-ধর্মের মূল্য         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 19
ভববিভূতিবাবু বলিবেন, তা হোক না, কিন্তু এখনও ত বরকে সেই মেয়ের বাড়িতে গিয়াই বিবাহ করিতে হয় এবং শোভাযাত্রা করিয়া ঘরে ফিরিতে হয়। এ ত আর বৈদেশিক সভ্যতার সংঘর্ষ একতিল পরিবর্তিত করিতে পারে নাই? তা পারে নাই সত্য, তবুও মনে পড়ে, সেই যে কে একজন খুব খুশী হইয়া বলিয়াছিল,—“অন্নবস্ত্রের দুঃখ ছাড়া আর দুঃখ আমার সংসারে নেই!”

আবার ইহাই সব নয়। “বিবাহিতা পত্নী যে গৃহের প্রধান অঙ্গ,—গৃহিণীর অভাবে যে গৃহ জীর্ণারণ্যের তুল্য”, তাহা ভট্টাচার্য্য মহাশয় “গৃহিণী গৃহমুচ্যতে”—এই প্রসিদ্ধ প্রবাদবাক্য হইতে সম্প্রতি অবগত হইয়াছেন। আবার ঋগ্বেদ পাঠেও এই প্রবাদটির সুপুরাতনত্বই সূচিত হইয়াছে। যথা—[৩ ম, ৫৩ সূ, ৪ ঋক্‌]

“জায়েদস্তং মঘবন্ত্‌ সেদু যোনিঃ”

অর্থাৎ হে মঘবন্‌—জায়াই গৃহ, জায়াই যোনি। সুতরাং বহু প্রাচীনকাল হইতেই হিন্দুগণ রমণীগণের প্রতি আদর ও সম্মান প্রদর্শন করিয়া আসিতেছেন। আবার তাঁহাদের পত্নী কিরূপ মঙ্গলময়ী, তাহা “কল্যাণীর্জায়া ... গৃহে তে” [৩ ম, ৫৩ সূ, ৬ ঋক্‌] হইতে স্পষ্টই প্রতীত হয়। সুতরাং—

“কিন্তু তথাপি বৈদেশিকগণ কেন যে হিন্দুগণের উপর রমণীগণের প্রতি কঠোর ব্যবহারের জন্য দোষারোপ করেন, তাহা তাঁহারাই জানেন।”

এই সকল প্রবন্ধ ও মতামতের যে প্রতিবাদ করা আবশ্যক, সে কথা অবশ্য কেহই বলিবেন না। আমিও একেবারেই করিতাম না, যদি না ইহা আমার প্রবন্ধের ভূমিকা হিসাবেও কাজে লাগিত। তথাপি প্রতিবাদ করিতে আমি চাহি না — কিন্তু ইহারই মত ‘বড় কাতরকণ্ঠে’ ডাকিতে চাহি—ভগবন্‌! এই সমস্ত শ্লোক আওড়ানোর হাত হইতে এই হতভাগ্য দেশকে রেহাই দাও। ঢের প্রায়শ্চিত্ত করাইয়া লইয়াছ, এইবার একটু নিষ্কৃতি দাও। -শ্রীমতী অনিলা দেবী ( ভারতবর্ষ, জ্যৈষ্ঠ ১৩২৩)