এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

পুস্তকাকারে অপ্রকাশিত রচনা  :  নারীর লেখা         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 12
শ্রীমতী অনুরূপা আর একস্থানে লিখিতেছেন—“ক্ষেত্র কর্ষিত হইলে শস্য দান করে, পতিত থাকিলে কণ্টক-গুল্মের আবাসভূমি হয়। সুতরাং ভারতবর্ষের নৈতিক ক্ষেত্রও আকর্ষণে যে কণ্টক-গুল্মে আচ্ছন্ন হইয়া উঠিবে, ইহা কোন স্বভাব-বিরুদ্ধ ব্যাপার নহে। বনস্পতি এ-কাননে পূর্বে বিদ্যমান ছিল বটে, কিন্তু এখন তাহা বল্মীক ও লতাস্তূপে এমন করিয়া ঢাকিয়া পড়িয়াছে, তাহাকে আর চিনিয়া বাহির করিবার বুঝি কোন উপায় নাই।” ছিল ক্ষেত্র এবং শস্য, আসিল কানন ও বনস্পতি। তা আসুক—ক্ষেত্র না হয় বন-জঙ্গল হইতেও পারে, কিন্তু কোন শস্যকেই ত বনস্পতি হইয়া উঠিতে দেখিলাম না। এদিকে ত হয় না—ও-দিকে হয় কিনা বলিতে পারি না। ওদিকে বোধ করি হয় না; কিন্তু ‘বনস্পতি’টি যে চাই-ই। কিন্তু, আমি বলি চাহিবার পূর্বে ও জিনিসটা যে মটর-কলায়ের গাছ নয়, এটা ত জানা উচিত ছিল। এই মহতের আশ্রয় ধরিতে গিয়া অনুরূপা একস্থানে লিখিলেন, “ভূমার সঙ্গে ভূমির, ক্ষুদ্রের সঙ্গে মহতের এই যে যোগ!” অর্থাৎ, ছোট্ট ভূমিটি মহৎ ভূমির সঙ্গে যুক্ত হইতেছে। ‘ভূমা’ কথাটা যে ব্যবহার করা আবশ্যক, আমি তাহা অস্বীকার করি না, কিন্তু কোন্‌টি ক্ষুদ্র, কোন্‌টি মহৎ সে সংবাদটাও কি বই লেখার পূর্বে অনুসন্ধান করা আবশ্যক ছিল না?

১৩১৭ সালের আষাঢ়ের ভারতীতে ‘প্রাচীন ভারতের পূজায়’ শ্রীমতী ঘোষজায়া লিখিয়াছেন,—“আত্মসম্মানের সঙ্গে আত্মসম্মানের সঙ্গে আত্মদানের একটা সাদৃশ্য আছে, এই সাদৃশ্য-সঙ্কট এড়াইবার জন্য, ভারতবর্ষের ধর্মনীতি আত্মসম্মানকে দূরে রাখিয়া আসিয়াছে। ফল যখন পাকে, তখন আপনা হইতেই বোঁটা ছাড়িয়া পড়ে, পাকাইবার জন্য তাহাকে বৃন্তহীন করিলে তাহা বিকৃতই হয়, পরিণত হয় না।” আমি আজ পর্যন্ত বুঝিতে পারিলাম না, এই ‘বোঁটাছাড়ার’ উপমাটির যোগ কাহার সঙ্গে। মৌলিক না হইলেও স্বতন্ত্রভাবে উপমাটি খুব ভাল তাহা স্বীকার করি, কিন্তু এই আগাগোড়া পরিপূর্ণ সুখ্যাতির মধ্যে ভাল যে এখানে সে কাহার করিতেছে তাহা বুদ্ধির অগোচর। “বাবলার মত সর্ববিসারি গুল্ম”টার ন্যায় ‘অহং’ জিনিসটাকে বারংবার নিন্দা করিয়া তাহাকে পরিবর্জন করিয়া প্রাচীন ভারতবর্ষ যেদিন বিরাট ব্যাপার করিয়াছিল, এবং তাহার প্রত্যেক জাতি, প্রত্যেক বর্ণ তাহার বিরাট রাজছত্রতলে স্থান পাইতেছিল, সেই সময়ে এই জোর করিয়া বোঁটাছাড়া অপরিণত ফলটি যে কোন্‌ শ্রেণীর মধ্যে ঢুকিতে গিয়া অন্যায় করিয়াছিল তাহা বুঝিয়া লইবার কোন পথই লেখিকা রাখেন নাই।