এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

অজ্ঞাত রচনা  :  কোরেল         
পরিচ্ছেদ: / 11
পৃষ্ঠা: / 29
স্ত্রীবিয়োগের পর কর্নেল হ্যারিংটন জুয়াক্রীড়ায় নিতান্ত মনঃসংযোগ করিলেন। সঞ্চিত অর্থ যত সঙ্কুচিত হইয়া আসিতে লাগিল, প্রবাসী পুত্রমুখ স্মরণ করিয়া তত অধিক উৎসাহের সহিত নষ্ট ধন পুনঃপ্রাপ্তির আশায় জুয়াক্রীড়া করিতে লাগিলেন। ক্রমে সমস্ত নিঃশেষ হইয়া আসিল, ক্রীড়ার মত্ততায় তিনি আত্মবিস্মৃত হইয়া বন্ধু নোলের নিকট বাটী বন্ধক রাখিয়া ঋণ গ্রহণ করিলেন! তাহাও শেষ হইল—দারুণ নিরাশায় তাঁহার উন্মত্ততা আসিল, একদিন রাত্রে খাইবার সংস্থান পর্যন্ত নাই—আর সহ্য হইল না—বন্দুকে গুলি ভরিয়া আত্মহত্যা করিলেন। পুত্র লিও তখন লন্ডনে বিদ্যাভ্যাস করিতেছিল—সংবাদ পাইয়া বাটী আসিল। মেরির জননী তখন জীবিত নাই। ক্যাপ্টান নোল মৌখিক সান্ত্বনা মাত্র করিলেন। সপ্তদশ বর্ষীয় লিও অকূলসমুদ্র দেখিয়া যখন ছটফট করিতেছিল, নিরতিশয় মমতায় করুণ অশ্রুভারাক্রান্ত চক্ষু দুটি লিওর মুখের পানে রাখিয়া তাহার হাত ধরিয়া মেরি কহিল, 'লিও ভয় করিও না—তোমার মেরি এখনও মরে নাই।'

এ কথার অর্থ সবাই বুঝে,—লিও অন্তরে আশীর্বাদ করিয়া মৃদু কম্পিত-কণ্ঠে বলিল, 'তাই হউক—জগদীশ্বর তোমাকে সুখে রাখিবেন।'

কিন্তু সেবার দুইজনেরই বড় দুর্বৎসর পড়িয়াছিল,—অধিক দিন না যাইতেই ক্যাপ্টান নোল জ্বরবিকারে প্রাণত্যাগ করিলেন। পিতৃ-মাতৃহীন মেরি লিওর বুকে মুখ রাখিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে বলিল, 'লিও শুধু তুমি রহিলে—বিপদে-সম্পদে আমাকে রক্ষা করিও।'

লিও চক্ষু-দুটি মুছাইয়া দিয়া বলিল, 'করিব।'

‘প্রতিজ্ঞা কর কখন পরিত্যাগ করিবে না।’

'প্রতিজ্ঞা করিলাম।'

মেরি মুখ তুলিয়া ধীরে ধীরে বলিল, 'তবে আর কাঁদিব না;—আমার সব আছে।'