এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

অজ্ঞাত রচনা  :  বিচার         
পরিচ্ছেদ: / 5
পৃষ্ঠা: / 8
দুই

রাজরাজেশ্বরী যমুনাবাই স্বর্ণসিংহাসনে বসিয়া মাথার হেমমুকুট ধীরে ধীরে কম্পিত করিয়া বলিলেন—'রাঠোন রাজ্যে মহোৎসবের আয়োজন কর মন্ত্রি, সাত দিনের মধ্যে নগরে যেন কোন দুঃখের চিহ্ন না দেখা যায়। যে দরিদ্র তাহাকে অর্থ দাও। যাহার যাহাতে প্রয়োজন তাহাই দেওয়া হউক, সকলে যেন সুখে ও সন্তোষের সহিত থাকে। যাহাকে সন্তুষ্ট করিতে পারিবে না তাহাকে তাড়াইয়া দাও—রাজাজ্ঞায় দুঃখী দুর্ভাগার স্থান নগরের বহির্দেশে হইয়াছে। দুর্জয় সিংহ!'

'মহারানি!'

'এতদিনে তুমি তোমার পদের গৌরব রক্ষা করিয়াছে। রাঠোন রাজ্যের প্রধান সেনাপতি। এই তোমার পুরস্কার।' যমুনাবাই নিজ গলদেশ হইতে বহুমূল্য মুক্তার মালা লইয়া তাঁহার হস্তে দিলেন। দুর্জয় সিংহ নতজানু হইয়া বহু সম্মানে সে পুরস্কার মস্তকে গ্রহণ করিলেন। 'মহারানীর জয় হোক।'

মহারানী কহিলেন, 'দুর্জয় সিংহ, এই সভামধ্যে বর্ণনা কর কেমন করিয়া সেই কণ্টককে টানিয়া বাহির করিয়াছে, কেমন করিয়া সেই অধম পাপিষ্ঠ চেত্তা রাজপুত্রকে বন্দী করিয়া সমগ্র রাঠোন রাজ্যের কৃতজ্ঞতাভাজন হইয়াছ।'

নতশিরে অভিবাদন করিয়া দুর্জয় সিংহ কহিলেন, 'চেত্তা রাজপুত্রের মত অসমসাহসী, মহাকৌশলী, সমরবিশারদ দুর্মদ যোদ্ধা রাজপুতের মধ্যে নাই।'

(সভামধ্যে) সাধু! সাধু!

যমুনাবাই ভ্রূকুটি করিয়া কহিলেন, 'বীরের কাহিনী বীরের মুখেই শোভা পায়—কিন্তু—'

দু—'না মহারানী, ইহাতে কিন্তু নাই, বীর মাত্রেই রাজপুত মাত্রেই এ কথা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিবে। আজ দুই বৎসর হইতে চেত্তারাজের সহিত সমর বাধিয়াছে; বলুন দেখি কবে কে চেত্তারাজের গতিরোধ করিতে পারিয়াছে? বিদ্যুতের শিখা যেমন পর্বত ভেদ করিয়া স্বচ্ছন্দে চলিয়া যায়, ভরত সিংহও সেইরূপ এই রাঠোন রাজ্য ভেদ করিয়া কতবার চলিয়া গিয়াছে, কখন কি বাধা পাইয়াছে? কিন্তু এই যে তাহাকে মহারানীর পদতলে আনিতে পারিয়াছি ইহা আমার বীরত্বের ফল নহে, ইহা স্বর্গীয় মহারাজার পুণ্যে এবং মহারানীর সৌভাগ্যবলে।'

'সাধু! সাধু!'