এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

নাটক  :  রমা         
পরিচ্ছেদ: / 4
পৃষ্ঠা: / 76
মাসী । বটে! তা হলে ত তাকে বাড়ি ঢুকতে দেওয়াই যায় না।

বেণী। কিছুতে না। হাঁ রমা, তোমার রমেশকে মনে পড়ে?

রমা। (সলজ্জ মৃদু হাসিয়া) এ ত সেদিনের কথা বড়দা। তিনি আমার চেয়ে বছর-চারেকের বড়। এক পাঠশালায় পড়েচি, একসঙ্গে খেলা করেচি, ওঁদের বাড়িতেই ত থাকতাম। খুড়ীমা আমাকে মেয়ের মত ভালবাসতেন।

মাসী । তার ভালবাসার মুখে আগুন। ভালবাসা ছিল কেবল কাজ হাসিল করবার জন্যে। তাদের ফন্দিই ছিল কোনমতে তোকে হাত করা। কম ধড়িবাজ ছিল রমেশের মা!

বেণী। তাতে আর সন্দেহ কি। ছোটখুড়ীও যে—

রমা। দেখো মাসি, তোমাদের আর যা ইচ্ছে বল, কিন্তু খুড়ীমা আমার স্বর্গে গেছেন, তাঁর নিন্দে আমি কারও মুখ থেকেই সইতে পারবো না।

মাসী । বলিস কি লো? একেবারে এতো?

বেণী। তা বটে, তা বটে। ছোটখুড়ী ভালমানুষের মেয়ে ছিলেন। তাঁর কথা উঠলে মা আজও চোখের জল ফেলেন। তা সে যাক, কিন্তু এই ত স্থির রইল দিদি, নড়চড় হবে না ত?

রমা। (হাসিয়া) না। বড়দা, বাবা বলতেন আগুনের শেষ, ঋণের শেষ, আর শত্রুর শেষ কখনো রাখিস নে রমা। তারিণী ঘোষাল জ্যান্তে আমাদের কম জ্বালা দেয়নি—বাবাকে পর্যন্ত জেলে দিতে গিয়েছিল। আমি কিছুই ভুলিনি বড়দা, যতদিন বেঁচে থাকবো ভুলবো না। রমেশ সেই শত্রুরই ছেলে। আমরা ত নয়ই—আমাদের সংস্রবে যারা আছে তাদের পর্যন্ত যেতে দেব না।

বেণী। এই ত চাই। এই ত তোমার যোগ্য কথা।

রমা। আচ্ছা বড়দা, এমন করা যায় না যে কোন ব্রাহ্মণ না তার বাড়ি যায়? তা হলে—বেণী। আরে, সেই চেষ্টাই ত করচি বোন। তুই শুধু আমার সহায় থাকিস আর আমি কোন চিন্তা করিনে। রমেশকে এই কুঁয়াপুর থেকে না তাড়াতে পারি ত আমার নামই বেণী ঘোষাল নয়। তারপরে রইলাম আমি আর ঐ আচায্যিব্যাটা। ছোটখুড়ো আর বেঁচে নেই, দেখি তাকে কে রক্ষা করে!

রমা। (হাসিয়া) রক্ষে করবেন বোধ করি রমেশ ঘোষাল। কিন্তু আমি বলে রাখলেম বড়দা, আমাদের শত্রুতা করতে ইনিও কম করবেন না।

বেণী। (এদিক-ওদিক চাহিয়া এবং কণ্ঠস্বর আরও মৃদু করিয়া) রমা, আসল কথা হচ্চে, বিষয়-সম্পত্তির ব্যাপার সে আজও কিছুই বোঝে না। বাঁশ নুইয়ে ফেলতে চাও ত এই সময়। পেকে উঠলে আর হবে না তা তোমাকে নিশ্চয় বলে দিচ্চি। দিনরাত মনে রাখতে হবে এ তারিণী ঘোষালের ছেলে আর কেউ নয়। চেপে বসলে আর—