বি। তুমি কি করে জানলে?
মা। তোমার বাপের কাছে শুনেছি।
বি। তবে কি হয়েছে বল।
মা। নন্দীদের তহবিল ভেঙ্গেচে বলে তারা হাজতে দিয়েছে।
বি। নন্দীরা কারা?
মা। বামুনপাড়ার জমিদার। তাদের কাছারিতে হারাণ মুখুজ্যে চাকরি করত।
বি। কত টাকা চুরি করেছে?
মা। প্রায় দু শ' টাকা।
বি। কেউ জামিন হয়নি?
মা। কে আর হবে বল? গাঁয়ে তোমার বাবাকেই সকলে জানে এবং তিনিই কেবল জামিন হতে পারেন কিন্তু তাঁকে ত সে পোড়া মিন্সে শত্রু করে রেখেচে। এঁকে একবার জামিন হতে বলেছিল, কিন্তু স্বীকার হননি।
বিন্দু অনেকক্ষণ মৌন হইয়া কি চিন্তা করিল, পরে বলিল, দুপুরবেলা একবার ওদের বাড়ি যাব। এসে পর্যন্ত বউকে একদিনও দেখিনি।
বিন্দুর মাতা বিস্মিত হইলেন এবং কুপিত হইয়া বলিলেন, এত কথা শুনেও যাবি?
বিন্দু যেরূপ সহজ ও স্বাভাবিকভাবে ঘাড় নাড়িয়া 'হাঁ' বলিল, তাহাতে গৃহিণীর আর কথা কহা হইল না। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া বিন্দু পুনরায় কহিল, আমি ওদের বাড়ি গেলে কারও কোন ক্ষতি নাই। আমি এই বলি মা, পুরুষমানুষদের ঝগড়া মেয়েমহল পর্যন্ত না পৌঁছুলেই ভাল।
বেলা হইতেছে দেখিয়া গৃহিণী উঠিয়া গেলেন; যাইবার সময় বলিলেন, ইনি শুনলে বড় রাগ করবেন।
বি। যাতে না শুনতে পান এমনি করে যাব।
মা। নিশ্চয় শুনতে পাবেন।
বি। তুমি শোনালেই পাবেন।
মা। কিন্তু, শুনলে বড় রাগ করবেন।
বিন্দু অন্যমনস্কভাবে কহিল, বাপ-মা সন্তানের উপর রাগ করেন, আবার ভুলে যান, সেজন্য তুমি ভেব না মা।