এই ওয়েবসাইটটি সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখতে হলে Mozilla Firefox, Microsoft Edge অথবা Apple Safari browser ব্যবহার করুন।

পুস্তকাকারে অপ্রকাশিত রচনা  :  আসার আশায়         
পরিচ্ছেদ: / 1
পৃষ্ঠা: / 4
আসার আশায়

জীবনটাকে কি গানের সঙ্গে তুলনা করা যায় না? ক্ষতি কি? গানের মত জীবনেরও একটা লয় থাক। সেই লয় কোনটায় দ্রুত—কোনটায় ঢিমে। কেউ যুদ্ধের বাজন বাজিয়ে দ্রুত তালে চলে যাচ্ছে—আর কেউ বা ঢিমে তালে দীর্ঘদিন ধরে পিছনে পড়ে থাকছে।

যারা একসঙ্গে পা ফেলে চলে যেতে পারে, তাদের ভাগ্য ভাল।

আমার ভাগ্যে তা হল না। তিনি বিজয়-গর্বে কবে চলে গেছেন—আর আমি! পোড়া কপাল আমার!

আমাকে দেখে তোমরা নিশ্চয় পাগল মনে করছ? তা করতে পার। আমার সাজের সঙ্গে জীবনের যে বিষম গরমিল রয়েছে!

আমার হাতে চুড়ি ঝকঝক করছে। আমার সিঁথেয় সিঁদুর ডগডগ করছে। আমার পরনে কস্তাপেড়ে শাড়ি!

কিন্তু যার জন্যে এই সব—তিনিই ত নেই!

সত্যি বলছি—ওগো তোমরা অমন করে হেসো না। গা-টেপাটিপি করে বলো না, আমি পাগল। সত্যি বলছি—আমি পাগল নই। তবে আমি কি? ওগো! ও-কথা বলতে যে আমি বড় ভয় পাই। বাস্তবিক তিনি কি নেই?

আমি কত লোককে জিজ্ঞাসা করেছি; কত সাধুসন্ন্যাসীর পায়ে মাথা খুঁড়েছি—কিন্তু কেউ কি আমার কথার জবাব দেবে না! তবে বুঝি এ কথার জবাব নেই!

তোমরা যদি কেউ বলতে পার ত—এই অভাগিনীর বড় উপকার হবে।

বলতে পারবে? আঃ—ভগবান তোমাকে সুখী করুন—আর কি বলব—দীর্ঘজীবী হও বলতে যে ভয় করে—ভয় হয়, আশীর্বাদ করতে না শাপ দিয়ে বসি।

তবে বলি, শোনো—

বোশেখ মাসে বেলের গাছ দেখেছ? কত পাতার আবরণে ঘন দলের বুকের মধ্যে কুঁড়িটি ঘুমিয়ে থাকে। বসন্তের কোকিলের ডাক তাকে জাগাতে পারে না। মলয় বাতাসের সব আরাধনাকে সে তুচ্ছ করে কেমন নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমিয়ে থাকে।